আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে মস্কো ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পর পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের উত্তেজনার পারদ যেন শুধু বাড়ছেই। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে জারি করা হচ্ছে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা।এরই ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার অর্থমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ রুশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ায় বুধবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং অর্থমন্ত্রী ম্যাক্সিম রেশেতনিকভের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।এছাড়া রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ‘ব্যাংক ভিটিবি পিএও’-র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যান্ড্রে কোস্তিনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সংস্থাটি।
পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে সোমবার ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয় মস্কো। এমনকি স্বীকৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশও দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
অবশ্য এর আগে থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রায় দেড় লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন রেখেছে প্রতিবেশী রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রথম দফায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয় ইইউ। সংস্থাটির পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল সেসময় বলেন, ইউক্রেনের দু’টি অঞ্চলকে ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে রুশ পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ইইউভুক্ত দেশগুলো সর্বসম্মতিক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ব্রাসেলসে ইইউয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জরুরি বৈঠকের পর মঙ্গলবার রাতে বোরেল নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা করেন। তিনি দাবি করেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বোরেল বলেন, ‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপের’ ঘটনায় জড়িত রাশিয়ার ২৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এর ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন করতে রাশিয়া বাধাগ্রস্ত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান আরও বলেন, রাশিয়ার সেনারা বর্তমানে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে অবস্থান করছে এবং এর অর্থ হচ্ছে- মিনস্ক শান্তিচুক্তির আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
আপনার মতামত লিখুন :