জাবিতে একাত্তরে গণহত্যা ও নারী নির্যাতন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

0

ওসমান সরদার, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) “একাত্তরে বাংলাদেশের গণহত্যা ও নারী নির্যাতন: পাকিস্তানি বাহিনীর মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারা” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র।

আজ রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. এ আর মল্লিক কালচার হলে এ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমরান জাহান।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে অধ্যাপক ড. খোঃ লুৎফুল এলাহী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, একাত্তরে বাংলাদেশে পাজিস্তানি বাহিনী যে নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে ও নারী নির্যাতন করেছে এর পেছনে তাদের যে মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারা ছিল তা সেমিনারে আলোচিত হবে।

কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী তথা পাকিস্তানি সরকার এদেশে যে গণহত্যা চালিয়েছেন তার নির্মম ইতিহাস আমরা জানি। আজকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যে মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সে বিষয়ে আলোচনা উঠে আসবে। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এই ইতিহাস জানার গুরুত্ব অধিক।

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতিক লে. কর্ণেল (অবঃ) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির। তার প্রবন্ধে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতা ও কিভাবে গণহত্যার নীলনকশা সাজানো হয়েছে এবং এর বাস্তবায়ন হয়েছে সেটি তুলে ধরেছেন। নারী নির্যাতনের যে ঘৃণ্য ইতিহাস তারা সৃষ্টি করেছেন, সেখানে তাদের মনস্তাত্ত্বিক যে চিন্তাধারা ছিল সেই বিষয়টি ফুটিয়ে তুলেছেন। তাদের চিন্তাধারা ছিল এদেশে নেতৃত্ব শূন্য করা, রাইভাল শ্রেণি তৈরি করা যারা তাদের আদর্শ এদেশে প্রতিষ্ঠা করবে।

তিনি আরও বলেন, এদেশে পাকিস্তানি বাহিনী যে নারীদের নির্যাতন করেছেন, ধর্ষণ করেছেন তাদেরকে হত্যা করা হয় নি, কারণ তাদের চিন্তাধারা ছিল এদেরকে বাঁচিয়ে রাখলে তারা যে সন্তান প্রসব করবেন তারা পাকিস্তানিদের হয়ে কথা বলবে, তাদের আদর্শের পরিপন্থী হবে। প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে তিনি বলনে, ‘আমরা সবাই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী।’

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা রাখেন অধ্যাপক এ কে এম জসীম উদ্দীন ও অধ্যাপক পারভীন জলী।

সেমিনারে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল এর মহাপরিচালক। বক্তব্যে ড. মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল বলেন, আজকের সেমিনারে আমি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হতে পেরে গর্বিত। সেমিনারে মূখ্য আলোচনার বিষয়, একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা ও নারী নির্যাতনেরর পেছনে বাহিনীর মনস্তাত্ত্বিক যে চিন্তাধারা সেটি প্রবন্ধ উপস্থাপকের বক্তব্যে এসেছে।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শানেওয়াজ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি, অধ্যাপক খালেদ কুদ্দুস, পরিসংখ্যান ও ডাটা সায়েন্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আলমগীর কবির, দর্শন বিভাগের সভাপতি আনারুল্লাহ ভূঁইয়া, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের সভাপতি রাকিব আহমেদ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

আপনার মন্তব্য

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.