ওসমান সরদার, প্রতিনিধি জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে(জাবি) নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের আয়োজনে আলো, শব্দ ও সঙ্গীত পরিকল্পনা শীর্ষক কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষার অংশ হিসেবে নাটক “কাপ্তান পুরান ” প্রদর্শনী হয়েছে। স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ রচিত “দ্যা রাইম অব দ্যা অ্যান্সিয়েন্ট মেরিনার” অবলম্বনে নাটক “কাপ্তান পুরান” রচনা, গবেষণা, পান্ডুলিপি ও নির্দেশনায় ছিলেন নাট্য গবেষক, নির্দেশক এবং নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিবুর রৌফ (শৈবাল)।
গত ৭ ও ৯ ডিসেম্বর-২০২৩ তারিখে সন্ধ্যা ৭.৩০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের থিয়েটার ল্যাব-৩ কক্ষে এ নাটক পরিবেশনা করা হয়। স্নাতক (সম্মান) ২০২১ পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থী (৪৭ ব্যাচ), অভিনেতা/অভিনেত্রীরা সহজে সংলাপ, আলোক ও সঙ্গীতের বিন্যাসকে সুপরিকল্পিত নান্দিকতায় পরিবেশিত হয় নাটকটি।
কোলরিজ তার “দ্য রাইম অফ দ্য অ্যানসিয়েন্ট মেরিনার” কবিতায় বেশ কয়েকটি থিম অন্বেষণ করেছেন। কবিতার কেন্দ্রীয় উদ্বেগ হল পাপ এবং পুনরুদ্ধার । এক সমুদ্র যাত্রায় জাহাজের কাপ্তান একটি আলবাট্রস পাখিকে হত্যা করে, খাবার বা বেঁচে থাকার জন্য নয়, শুধুমাত্র ক্রোধের বশবর্তীতার জন্য। এটি একটি ইঙ্গিত যে প্রাণীর জীবনের প্রতি তার কোন সম্মান নেই। প্রাণীর প্রতি মানুষের অবহেলা এতটাই যে, সে গুলি করার আগে বা পরে তার ক্রিয়াকলাপ বিবেচনা করে না।
এই কবিতায় কাপ্তান পাখিটিকে হত্যার ভুল উপলব্ধির সময়, সে একাকি নিরব সমুদ্রে মানুষের সাথে যোগাযোগ তথা নিজস্ব চিন্তা থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কাপ্তানের জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর অ্যাডভেঞ্চার, ভৌতিক এবং রহস্যকে স্থান-কাল ভেদে ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস পেয়েছে আলো, শব্দ ও সঙ্গীত পরিকল্পনা ও প্রক্ষেপণের ভিতর দিয়ে। আধুনিক ভাষার ব্যবহারে সাধারণ নিক্তিতে সাদাকালো রঙকে বেইজ করে পোষাকের বহুবর্ণিল ব্যবহার করা হয়েছে। নাটকটি যেহেতু শ্রেণী পাঠ্যক্রমভুক্ত প্রযোজনা সেজন্য নিয়ম মাফিক গবেষণাগারে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গীতের ক্ষেত্রে নাট্য আবহকে প্রাধান্য দিয়ে সঙ্গীত রচনা ও সুরারোপ করা হয়েছে। কোরিওগ্রাফী ও আলোক পরিকল্পনায় শিক্ষার্থীদের নিয়মিত মহড়া দেয়া হয়েছে। সমকালীন প্রেক্ষাপটের নীরিখে এই পান্ডুলিপিটি গবেষণার ভিতর দিয়ে রচিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে প্রথম একেডেমিকভাবে প্রযোজিত ‘কাপ্তান পুরান’ নাটকটির নির্দেশনার ক্ষেত্রে মিক্সড রীতির ব্যবহার করা হয়েছে।প্রাণীদের জন্য মানুষের করণীয় মনোভাব যেন ইতিবাচক ও মানবিক হয়, মানবিকতার যেন অবমূল্যায়ন না হয় সে বিষয়টিকে ভিত্তি করে প্রতি দৃশ্যে শুদ্ধ সংলাপ ও গীতল সুরাশ্রয়ে আবেগ তৈরীর প্রয়াসে ঝকঝকে আলোক পরিকল্পনা করা হয়েছে।