জাবিতে মেয়াদোত্তীর্ন সকল পর্ষদে নির্বাচনের জোর দাবি বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের

0

ওসমান সরদার, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) গণতান্ত্রিক পর্ষদগুলোতে নির্বাচনের জোর দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।’

মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান বলেন, ‘ ১৫ মে ১৯৯০ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় প্রস্তাবিত ও ২৩ জুন ১৯৯০ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সিনেট কর্তৃক অনুমোদিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের চতুর্থ সংবিধিবলী অনুযায়ী উপাচার্যের পর্ষদ নির্বাচনের দায়বদ্ধতা রয়েছে।

গণতান্ত্রিক পর্ষদ নির্বাচনের বিষয়ে উপাচার্যকে ছয়বার সশরীরে উপস্থিত হয়ে এবং বিবৃতির মাধ্যমে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক সমিতির নির্বাহী পরিষদ দুইবার উপাচার্যকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। তবে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। এতে একদিকে তিনি দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, অন্যদিকে কালক্ষেপণের মাধ্যমে সহকর্মীদের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। এমনকি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত না করে বিভিন্ন বিভাগ, অফিস ও আবাসিক হলে একের পর এক নিয়োগ দেয়ায় ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।’

নির্বাচন দিতে উপাচার্যের অনীহার কারণ কী হতে পারে? জানতে চাইলে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কারণ খুবই স্পষ্ট। বিশেষ গোষ্ঠীকে বিশেষ বিশেষ সুবিধা দিতেই এই অনীহা। আবার নির্বাচনে উপাচার্য নিজের পছন্দের প্রার্থীদের জিতিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন না এমন আশঙ্কা থেকেও এই গড়িমসি হতে পারে।’

পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে নেতৃবৃন্দ জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে বলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাইনি। কারণ এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আগামী ৮ আগস্ট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা। সেখানে ৩নং আলোচ্যসূচিতে নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এরপরও কোন অগ্রগতি না দেখলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।’

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা চর্চা করা ছাড়া প্রশাসন সব কাজ করে যাচ্ছে। প্রশাসন একটি বিশেষ মহলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক পর্ষদের নির্বাচন দিচ্ছে না। গণতান্ত্রিক চর্চার অভাবে সাড়ে ১৪শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প মাস্টার প্ল্যান ছাড়া ব্যয় করা হচ্ছে। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা এর সুফল ভোগ করতে পারছে না।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে সিনেট হতে সিন্ডিকেট সদস্যের মেয়াদ, ২০১৮ সালের মে মাসে ডীন, জুনে সিন্ডিকেট, শিক্ষক পর্ষদ, অর্থ কমিটি, একই বছর অক্টোবরে সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি এবং ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি মেয়াদ শেষ হয়েছে। এছাড়াও দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে জাবিতে জাকসু নির্বাচন নেই।

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের চিন্তা আছে। সুযোগ বুঝে নির্বাচন দিবো।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম, অধ্যাপক ড. মো. সোহেল রানা, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক ড. ফারুক আহমেদ, অধ্যাপক ড. মো: নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মাসুম শাহরিয়ার, অধ্যাপক শাহ নেওয়াজ, অধ্যাপক জামাল উদ্দীন, অধ্যাপক মুহম্মদ নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.