জাবিতে ৪ দফা দাবিতে উপাচার্যকে  ছাত্র ইউনিয়নের স্মারকলিপি 

0
ওসমান সরদার, প্রতিনিধি জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিলম্বে নতুন সবগুলো হল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা এবং শিক্ষার্থীদের বৈধ সিট নিশ্চিত করে ক্লাস শুরু করাসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অফিসে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের আহবায়ক আলিফ মাহমুদ ও নেতৃবৃন্দ।
চার দফা দাবি হলো, অবিলম্বে নতুন সবগুলো হল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করে এবং শিক্ষার্থীদের বৈধ সিট নিশ্চিত করে ক্লাস শুরু করতে হবে। অবৈধ শিক্ষার্থীদের বের করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। গেস্টরুম ও র‍্যাগিং সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। শেখ রাসেল ও ফজিলাতুন্নেছা হলের গ্যাস লাইন চালুসহ  যে নতুন হলগুলো চালু করা হবে গ্যাসের সুবিধা নিশ্চিত করেই তা  চালু করতে হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। এই পরিচিতি কেবল গৌরবের বিষয়ই নয়, একই সাথে শিক্ষার সুস্থ্য স্বাভাবিক পরিবেশের জন্যও অপরিহার্য একটি ক্ষেত্র। এজন্য এখানে ভর্তি হওয়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বৈধ সিট নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নৈতিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব, যা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। একইসাথে র‍্যাগিং, গেস্টরুম, মাদক প্রভৃতি সন্ত্রাসমূলক কর্মকান্ড সংগঠিত হচ্ছে।
সেখানে আরো বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের  পূর্ণাঙ্গ আবাসিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নতুন করে ছয়টি হল নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হবার পরেও এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও, তার বাস্তবায়ন হয়নি। আবাসন সংকট নিরসনে নতুন ছয়টি হলের মধ্যে দুইটি হল অপূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলেও বাকি হলগুলো চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
চালু হওয়া হলগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই বলে তারা দাবি করেন, কোনোটিতেই নেই গ্যাস সংযোগ ও পর্যাপ্ত লোকবল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্যাস সংযোগের বিষয়ে প্রচেষ্টার কথা বলা হলেও আদতে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। শিক্ষার্থীদের খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থা করতে না পারাটা শিক্ষার্থীদের জন্য দূর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
এছাড়াও  রাজনৈতিক সংগঠনের ছত্রছায়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া অসংখ্য অছাত্র অবস্থান করছে । ফলে সিট সংকট ক্রমাগত তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এরকম একটি বেহাল পরিস্থিতিতে নবীন শিক্ষার্থীরা ক্যম্পাসে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অথচ বর্তমানে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরাই অনেকে গণরুমে অবস্থান করছে এবং তাদের সুষ্ঠু আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতে কার্যকরী উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। এতে নবাগত শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কিত না হবার উপায় থাকছে না।
গেস্টরুম ও র‍্যাগিং নামক অপসংস্কৃতির উল্লেখ্য করে তারা বলেন, অনেকে আশা আর স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন, কিন্তু  হলে ওঠা একজন নতুন শিক্ষার্থীর কাছে গণরুম এবং র‍্যাগিং সংস্কৃতির কারণে  বিশ্ববিদ্যালয়কে নরকসম মনে হয়। ফলে শুরুতেই তাদের সকল আশা হতাশায় পরিণত হয়। দলীয় প্রভাব ও অনুগত কর্মী তৈরির উদ্দেশ্যে প্রথম বর্ষেই একজন শিক্ষার্থীর মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়। গেস্টরুমে নির্যাতন কিংবা র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগের ঘটনা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি।

আপনার মন্তব্য

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.