গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: ৭০ বছরের বৃদ্ধ আউয়াল খাঁ। ১৩ বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্থ (প্যারালাইজড) স্ত্রীকে ভ্যানে করে ভিক্ষা করেন তিনি। ভিক্ষা ও দুজনের দুইটি বয়স্ক ভাতার টাকা দিয়ে চলে তাদের সংসার। থাকেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গওহরডাঙ্গা গ্রামের একটি জরাজীর্ণ টিনের ঘর ভাড়া নিয়ে। নেই নিজস্ব কোন জায়গা জমি। তাই একটু শান্তিতে থাকতে শেষ বয়সে মাথা গোঁজার ঠাঁই চেয়েছিলেন আউয়াল খাঁ।
তার দারিদ্রতা ও অসহায়ত্ব নিয়ে মানবিক সংবাদ প্রকাশ হয় বিভিন্ন গনমাধ্যমে। সংবাদটি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নজরে এলে তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নতুন একটি ঘর বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু সেটি প্রস্তুত না হওয়ায় হস্তান্তর করা হয়নি।
অবশেষে আউয়াল খাঁ ঘর ও দুই শতাংশ জমির মালিক হচ্ছেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রায়ন প্রকল্পের আওতায় টুঙ্গিপাড়ায় আউয়াল খাঁর হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে চাবি ও দলিল হস্তান্তর করবেন।
আউয়াল খাঁ বলেন, সারা জীবন মানুষের বাড়ি বাড়ি থেকেছি। আল্লাহ কোনদিন একটা ঘর করার সামর্থ্য দেয়নি। শেষ বয়সে চলাফেরা শক্তি ও হারিয়ে ফেলেছি। তারপরও পেট চালাতে স্ত্রীকে নিয়ে ভ্যানে করে ভিক্ষা করতে হয়। ভিক্ষার টাকা ও দুইটি ভাতার টাকা দিয়ে চলে সংসার ও যাবতীয় খরচ।
এই নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নতুন একটি ঘর দেওয়ার আশ্বাস দেন। এখন আগামীকাল জমি সহ ঘর পাচ্ছি, এখানেই আমার মাথা গোজার ঠাই হবে স্ত্রীকে নিয়ে। বাকি জীবন নিজের বাড়িতে কাটাতে পারবো। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ রাখুন। তিনি যেন আমাদের জন্য আরো কাজ করতে পারেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন বলেন, ২২ মার্চ (বুধবার) উপজেলার ১৬৪ ভূমিহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নতুন ঘর পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ভূমিহীন পরিবার গুলোর মাঝে জমি সহ ঘর হস্তান্তর করবেন। এর মধ্য দিয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হবে।
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ন প্রকল্প ২ গ্রহন করেন। এই প্রকল্পের আওতায় টুঙ্গিপাড়া গৃহীন ও ভূমিহীন ৩১৪ পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়। ইতিমধ্যে ১৫০ টি ঘর বিতরন করা হয়েছে। শেষ ধাপে ২২ মার্চ আরো ১৬৪ পরিবারকে ঘর দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হবে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ।