নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্ট মা-বাবা সব হারিয়েছি। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মানুষই আমার পরিবার। আমি যেটুকু করি, বাংলাদেশের মানুষের জন্য করি। আপনজন সব হারানোর পর এ দেশের মানুষই আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ।
বুধবার দুপুরে সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আগামী নির্বাচনেও ক্ষমতায় যাবে। তবে নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে, সেভাবেই কাজ করতে হবে সবাইকে। সামনে নির্বাচন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেক চক্রান্ত হবে। কেননা একটা দেশ দ্রুত এত উন্নতি করুক অনেকেই এটা চায় না। কাজেই তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করেই যাবে।
বিরোধী দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি মাটি-মানুষ থেকে উঠে আসা দল নয়। তাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটরদের হাতে। প্রতিদিন তারা মাইক লাগিয়ে মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে। রোজা-রমজানের দিন তারা এত মিথ্যাচার করছে কেন, তাও আমি বুঝতে পারছি না। তাদের তো উচিত একটু রয়ে-সয়ে কথা বলা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একটা দেশের উন্নয়নের জন্য যা যা করণীয়, তা আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি। এজন্য আওয়ামী লীগকে মানুষ বারবার ভোট দেয়, এটাই হলো বাস্তবতা। কাজেই আমাদের কখনও ভোট চুরি বা অন্যকিছু করা লাগে না। জনগণের সেবা করে, জনগণের আস্থা নিয়েই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অন্যভাবে কখনো ক্ষমতায় আসেনি। সবসময় ভোটের মাধ্যমে এসেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা (বিএনপি) এখন মাইক লাগিয়ে সারাদিন বসে কথা বলে সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে। তাদের তো ক্ষমতায় আসাই হয়েছে বন্দুকের নলে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে। এজন্য জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ২৯টি সিট। সে নির্বাচন নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। তাদের অবস্থান তো সেখানেই নির্দিষ্ট। তারপরও আমরা দেশে উন্নয়নের কাজ করে দেশকে এত উন্নত করতে পেরেছি। আজকে আমরা এটাই শুকরিয়া আদায় করি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হবে, সেটা আমরা চাই। আর আগামী নির্বাচনও সামনেই, সেটা মাথায় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। কাজেই আমরা জাতির পিতার সেই আদর্শ মেনে দেশ এবং দেশের মানুষের উন্নতির জন্য কাজ করে যাব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতকাল একনেকে আমাদের পরিকল্পনামন্ত্রী সারা বাংলাদেশের সার্ভে রিপোর্ট পেশ করেছেন। সেখানে বললেন, আমাদের দারিদ্র্যসীমা ২০০৬ সালে ৪১ ভাগ ছিল, আজকে সেটা ১৮ ভাগে নেমে এসেছে। তো আমি বললাম আরও ২/৩ ভাগ যাতে তাড়াতাড়ি কমাতে পারি, সেটা আমরা চেষ্টা করব। আর অতি দরিদ্রের হার যেটা প্রায় ২৫ ভাগ ছিল সেটা ৫ ভাগে নেমে এসেছে। এটা মাথায় রেখে আমাদের আরও সামনে কাজ করতে হবে দেশের মানুষের জন্য। যে একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না।
ভূমিহীন মানুষকে খুঁজে পেতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকের অঞ্চলে আপনারা খোঁজ করবেন কোনো পরিবার নিঃস্ব আছে কি না, ভূমিহীন আছে কিনা। কেউ ভূমিহীন থাকবে না এই দেশে।