শাকিব খানকে হত্যার হুমকি: প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিচার শুরু

0

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকাই সিনেমার নায়ক শাকিব খানের কাছে চাঁদা দাবি ও তাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে করা মামলায় প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।

বুধবার ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমা এ অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের সময় রহমত উল্লাহ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৯ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত।

এদিন শাকিব খানের আইনজীবী খায়রুল হাসান আসামি রহমত উল্লাহর আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। ফলে আদালতের অনুমতি ছাড়া রহমত উল্লাহ বিদেশ যেতে পারবেন না।

এর আগে গত ২৩ মার্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে শাকিব খান বাদী হয়ে রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামি রহমত উল্লাহকে ২৬ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।

পরে গত ২৬ এপ্রিল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ২৭ মার্চ টেলিভিশনে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ায় অভিযোগে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে চিত্রনায়ক শাকিব খান আরও একটি মামলা করেন। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, চার বছর আগে চিত্রনায়ক শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামক ছবিতে অভিনয় করতে চুক্তিবদ্ধ হন। এ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে শিবা আলী খানকে মনোনীত করা হয়। এ ছবির শুটিংয়ের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট অস্ট্রেলিয়া যান শাকিব খান। শিবা আলী খান ভিসা জটিলতার জন্য শুটিং করতে অস্ট্রেলিয়া যেতে পারেননি। তার জায়গায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান রেনেসা সাবরিনের সঙ্গে শাকিবকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন রহমত উল্লাহ। তবে শাকিব তার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বিষয়টি নাকচ করে দেন।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, শুটিং শেষে শাকিবকে রিফ্রেশমেন্টের জন্য ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রেনেসা সাবরিনসহ আরও ২/৩ জন অপরিচিত লোক দেখতে পান শাকিব। মামলার আসামি রহমত উল্লাহসহ অন্যদের সঙ্গে একসঙ্গে ক্লাবে খাওয়া-দাওয়াসহ বিভিন্ন প্রকার পানীয় পান করেন। এক পর্যায়ে শাকিব অসুস্থবোধ করেন। হোটেলে ফেরত আসার সময় রহমত উল্লাহ এবং অন্যদের খোঁজ করেন শাকিব। তবে তাদের না পেয়ে রেনেসা সাবরিনের কাছে বিদায় নিয়ে গভীর রাতে হোটেলে ফিরতে চান শাকিব। তখন রেনেসা সাবরিন বলেন, ‘আপনি যেহেতু অসুস্থবোধ করছেন, তাহলে আমি আপনাকে হোটেলরুমে পৌঁছে দিয়ে আসি।’ শাকিব অনেকটা নিরুপায় হয়ে তার প্রস্তাবে রাজি হন এবং হোটেলে ফিরতে ক্লাব থেকে বের হন। হোটেলে ফেরার সময় বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে অজ্ঞান হয়ে যান শাকিব।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরদিন সকালে আসামি রহমত উল্লাহ শাকিবকে ফোনে জানান যে, ‘তুমি রাতে ওই নারীর সঙ্গে কী করেছো সবকিছুর ভিডিও ক্লিপ আমার হাতে। তুমি যদি আমাকে এক লাখ ডলার চাঁদা না দাও তাহলে সব ভিডিও ক্লিপ এবং রেনেসা সাবরিনকে নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে তোমার নামে অভিযোগ করবো। তাহলে তুমি বাংলাদেশে যেতে পারবে না।’

এরপর গত ১৬ মার্চ রহমত উল্লাহ শাকিব খানের কাছে এক লাখ ডলার চাঁদা দাবি করেন ও প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

এদিকে গত ১৩ এপ্রিল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালতে রহমত উল্লাহ বাদী হয়ে শাকিব খানের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে একটি মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

আপনার মন্তব্য

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.