নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানালে তাতে বিএনপি সাড়া দেবে।
শনিবার দুপুরে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি আগেও ইসি গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসেছিলো। আমরা আমাদের প্রস্তাবনা পেশ করলেও কোনো কাজে আসেনি। কারণ, তার সাংবিধানিক কোনো ক্ষমতা নেই। যার সঙ্গেই সংলাপ হোক না কেন, মূলত সরকারপ্রধানের ইশারার বাইরে কেউ কথা বলেন না।
সংসদের ৫০ বছর পূর্তিতে আপনার মূল্যায়ন কি, এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি অনির্বাচিত সংসদ। সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর। কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, প্রশাসনকে সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করেছে। বিচার ব্যবস্থা একেবারেই দলীয়করণের চেষ্টা করেছে। দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমরা ২২টি রাজনৈতিক দল গত বছরের ২ আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের প্রধান দাবি সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এ আন্দোলন করতে গিয়ে ইতিমধ্যে ১৭ জন জীবন দিয়েছে। এ পর্যন্ত আমাদের ৬০০ নেতাকর্মী গুম হয়েছে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত রাখা হয়েছে। এ সরকারের আমলে আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র রমজান মাসেও বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে, বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আনেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, এরা (আ.লীগ সরকার) গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো কুক্ষিগত করে রাখতে চায়। এভাবে গায়ের জোরে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চায় তারা।
এরআগে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির লিয়াজো কমিটি।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আমরা জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজো কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ আন্দোলন কর্মসূচি এবং আমাদের মাঝে বিদ্যমান ঐক্য আরো কিভাবে অটুট রাখা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছি।
এসময় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক, এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আমরা আজকে সভায় ভবিষ্যৎ আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে আলোকপাত করেছি। আওয়ামী লীগ সংযমের মাসেও সংঘাত করতে চায়। এই আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকাকালীন এই রমজানে মাসেও হরতাল দিয়েছিলো।
সভায় বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. নুরুল আমীন ব্যপারী, গণদল চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল চেয়ারম্যান ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি সভাপতি সুকৃতি কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ সভাপতি, ব্যরিস্টার নাসিম খান, বাংলাদেশ পিপলস লীগ সভাপতি এ্যাড. গরীব নেওয়াজ।