জাবিতে সাংবাদিক নির্যাতন: এক মাসেও উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন

0

ওসমান সরদার, জাবি প্রতিনিধি: এক মাস পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাংবাদিক আসিফ আসিফ আল মামুনের উপর নির্যাতনের ঘটনায় বিচার হয়নি। একে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে, ২২ আগস্ট দিবাগত রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের মাঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অতর্কিত হামলার শিকার হন সাংবাদিক আসিফ আল মামুন। হলের গেস্টরুমে ছাত্রলীগের সভার ভিডিও করছেন এ সন্দেহে তাকে মারধর করা হয়। এসময় তিনি একই হলের আবাসিক ছাত্র ও সাংবাদিক পরিচয় দিলে তাকে আরেক দফা মারধর করা হয়।

এ ঘটনায় পরদিন ১৫ জনকে মূল অভিযুক্ত এবং ৮ জনকে মদদদাতা উল্লেখ করে প্রাধ্যক্ষ বরাবর বিচারের আবেদন করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। এর প্রেক্ষিতে সেদিন রাতে ওয়ার্ডেন অধ্যাপক ড. এজহারুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। পরে তদন্তের স্বার্থে আরো তিন দিন সময় বৃদ্ধি করে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, মারধরের ঘটনার ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একজনকে সন্দেহাতীতভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া আরো ৪—৫ জনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আসিফ আল মামুন বলেন, ক্যাম্পাসের মারধরের ঘটনায় প্রশাসন খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। তবে আমার উপর নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি অভিযুক্তদের ডেকে ডেকে ঘটনা শুনেছে। কিন্তু কাউকে কোন কারণ দর্শানো নোটিশ বা সাময়িক বহিষ্কার কোনোটাই করা হয়নি। এর আগেও সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় আমরা এ ধরণের মনোভাব দেখেছি। এটা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেই প্রভাবিত করে।

এ ঘটনায় হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ইস্রাফিল আহমেদ জানান, ১০ সেপ্টেম্বর আমরা তদন্ত প্রতিবেদন ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে ডিসিপ্লিনারি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিবে।

তবে ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য সচিব প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেটের আগে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সভা হওয়ার কথা ছিল। তবে কমিটির সদস্যরা (প্রভোস্ট ও ডীনরা) সময় না দেওয়ায় বোর্ড বসানো সম্ভব হয়নি। তাই সিন্ডিকেটে তোলাও সম্ভব হয়নি।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন নিয়মতান্ত্রিকভাবে ডিসিপ্লনারি বোর্ড হয়ে সিন্ডিকেটে উত্থাপিত হয়। ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের কারণেই বিচার করা সম্ভব হচ্ছে না। এ মাসের শেষে আমাদের আরো একটা সিন্ডিকেট আছে। খুব দ্রুত আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবো।

আপনার মন্তব্য

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.