ওসমান সরদার, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্র—শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে জড়িত হওয়ার অনুমতি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে দোকান খুলতেও আছে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা। তবে এবার নিয়ম ভেঙ্গে প্রধান সড়কের পাশে পিৎজার দোকান দিয়েছেন এক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকলেও যথাযথ ভূমিকা নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও পরিসংখ্যান ভবনের বিপরীত পাশের প্রধান ফটক থেকে শহিদ মিনারগামী সড়কের পাশে নতুন এ পিৎজার দোকানের দেখা মিলেছে। ‘পিৎজা চত্বর’ নামের এ দোকানের উদ্যোক্তা ও সত্ত্বাধিকারী আদনান। তিনি একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের ৪৮ ব্যাচ ও শহীদ সালাম বরকত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
তবে নিয়ম ভেঙ্গে পিৎজার দোকান দেয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে তার পিৎজার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। বিকেল হলেই শিক্ষার্থীদের ভিড় করে পিৎজা অর্ডার দিতে দেখা গেছে। ক্রেতারা অর্ডার দেয়ার পর তাদের সামনে বানিয়ে পাশে রাখা চুল্লিতে বেক করে বানানো হয় এ মুখরোচক পিৎজা।
বিকেল পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলে তাদের বেচাকেনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিশ্ববিদ্যলয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে তার ফুডকোর্টের প্রশংসা করতে দেখা গেছে। শুক্র ও শনিবারে বহিরাগত দর্শনার্থীরা চলতি পথে তার ‘দামে কম মানে ভালো’ পিৎজার স্বাদ নিতে কিছুক্ষণ যাত্রা বিরতি দিচ্ছেন। তবে এতকিছুর পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধি ভেঙ্গে দোকান দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র—শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮ এর ৫(ঠ) অনুযায়ী, ‘কোন ছাত্র/ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনরূপ ব্যবসা—বাণিজ্যে অংশগ্রহণ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে ব্যবাসয়িক স্বার্থে জড়িত থাকবে না। ক্যাম্পাসে দোকান খোলা বা চালানো কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে দরপত্র দাখিল এ বিধির অন্তভুর্ক্ত বলে গণ্য হবে।’
দোকান স্থাপনের অনুমতি নেয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে আদনান বলেন, ‘আমাদের পাশের যে দোকানগুলো আছে কেউ কি অনুমতি নিয়েছে? ওখানে আমার জানামতে কারোই অনুমতি নাই।’
‘ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীরা দোকান দিতে পারে না’ এ বিষয়ে জানেন কিনা বলা হলে তিনি বলেন, এখানে কোন শিক্ষার্থী জড়িত না এটার সাথে। আপনি ভুল জানেন। আমি মাঝে মাঝে গিয়ে ওখানে থাকি। দোকানটার মালিক বাইরের।’ তবে দোকানের মালিক কে সেটা বলতে পারেননি তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্পাসে তো আরও দোকান এর আগে থেকেও ছিল। এটা আলাদা করে কি দোষ করলো? হঠাৎ করে এটা কি এমন শৃঙ্খলা ভাঙলো? এটা কি কারও প্রবলেম করছে?’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ—উল—হাসান বলেন, পিৎজার দোকান এখানে কিভাবে দেয়? এটার কোন পারমিশন নাই। দোকানের বিষয়ে ফ্যাকাল্টি বা সিকিউরিটি অফিস কেউ আমাকে জানায় নি। এভাবে কেউ দোকান দিতে পারে না। বিষয়টি আমার কনসার্নে আসলো, আমি এ বিষয়ে দেখবো।’