নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একবার আবাহনী ক্লাবের জন্য অ্যাডিডাস জুতা কিনতে চেয়েছিল শেখ কামাল। আমি ওকে বলেছিলাম, তুমি কাগজে লিখে দাও। কারণ, আমি তো অত কিছু চিনি না। পরে কাগজে লিখে দিয়েছিল। আজও কাগজে শেখ কামালের অ্যাডিডাস লেখা আমার চোখের সামনে ভাসে।
শনিবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১টায় শহীদ শেখ কামালের ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর শেখ ওসমানী মিলনায়তনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ কামালের তেমন কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। খুব সাদাসিধে জীবনযাপন করত। খেলায় তার খুব মনোযোগ ছিল। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি ইত্যাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল শেখ কামালের।
তিনি বলেন, যখন শেখ কামালের বিয়ে হয়, তখন তার ছোট্ট একটি আপত্তি ছিল। তার কথা ছিল—আমি তো এখনও স্টুডেন্ট; কীভাবে বিয়ে করব? টাকা পাব কোথায়? ওই সময় আমার একটা গাড়ি ছিল। ওই গাড়িটা বিক্রি করেছিলাম। ওর নামে একটি অ্যাকাউন্ট করে কিছু টাকা দিয়েছিলাম। তাকে বলেছিলাম, বিয়ের পর তোমাকে কারও কাছে হাত পাততে হবে না। অ্যাকাউন্টে যে টাকা থাকবে, তা খরচ করবে।
৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ১০ ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এর আগে, সকাল ৮টায় ধানমন্ডির আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় আওয়ামী লীগ।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিমসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
পরে যুবলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়।
এদিকে, শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। তিনি একাধারে ছিলেন দেশের সেরা ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়াবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, এছাড়া ছাত্র হিসেবেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন থেকে ফিরে এসে তিনি বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আত্মনিয়োগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণীতে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। দেশ স্বাধীনের আগেই তিনি আবাহনী সমাজকল্যাণ সংস্থা গঠন করেন। তিনি খেলোয়াড়দের স্বাবলম্বী করার নানা উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি তাদের অবসর ভাতা প্রদানেরও পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সে লক্ষ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান নিয়ে ‘খেলোয়াড় কল্যাণ তহবিল’ গঠন করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শেখ কামাল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বিপথগামী একদল সেনাকর্মকর্তার বুলেটে মাত্র ২৬ বছর বয়সে শাহাদতবরণ করেন তিনি।