নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়েরকৃত এক মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের সাবেক অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর (৩৮) জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন-৬ এর কাজী শরিফুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কঠোর নিরাপত্তায় আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে কাজী শরিফুল ইসলামের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে, সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারের পর ডিবি সূত্র জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম ও রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৮ দফা দাবি নিয়ে বেশ কয়েকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরবর্তীতে বহিষ্কৃত) বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর নগরের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, যা এখনো সেখানে রয়েছে। ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি মহাসমাবেশ হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো মানুষ ওই সমাবেশে যোগ দেন। ওইদিন চন্দন কুমার ধরসহ ৯ জন আসামির ইন্ধনে বাকি আসামিরা নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেখানে স্থাপন করে দেয়। এ নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এই মামলার পর ইসকন প্রবর্তক ধাম অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রসঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি মামলাটি সনাতনীদের আট দফা দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে আখ্যা দেন। ওই বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সনাতনীদের ওপর চালানো হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন। এই আন্দোলন বর্তমান সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।’