ওসমান সরদার, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সিনেটের ৩৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বচনে ভোট গ্রহণ চলছে। আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সকাল নয়টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়৷ তবে দুপুর একটায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অব্যবস্থাপনা ও বুথ সংখ্যা কম হওয়ার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ভোটগ্রহণ শেষ করা যায়নি।
ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষক-কর্মকর্তা ক্লাবের ফটকে ভোটাররা আসার সাথে সাথে তাদের কাছে ভোট চাইছেন প্রার্থীরা। ক্লাবের বারান্দায় লম্বা লাইন ধরে ভোটপ্রদানের জন্য অপেক্ষা করছেন শিক্ষকরা৷ অনুষদ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন টেবিল থেকে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে কাপড় ঢাকা কক্ষে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্সে ফেলতে হয়৷ তবে শিক্ষক অনুপাতে বুথের সংখ্যা কম হওয়ায় শিক্ষকদের লম্বা সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে৷ দুপুরের তীব্র গরমে অতীষ্ট হয়ে পড়ছেন শিক্ষকরা৷
সিনেট সদস্য পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির বলেন, আমরা আগেই বলেছি বুথের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য৷ এত শিক্ষকের জন্য মাত্র দশটা বুথে কিভাবে হবে? রিটার্নিং অফিসার এখন গেছেন কাপড় কিনতে৷ ভোট নিতে নিতেই তো বিকাল হয়ে যাবে। ফলাফল গণনা করবে কখন?
মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক নিগার সুলতানা বলেন, আমি প্রায় এক ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছি। বুথ আরো বেশি থাকলে দ্রুত শেষ করে দেয়া যেত। আর জায়গাটাও ছোট৷
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তারিকুল ইসলাম বলেন, আমি দেড় ঘন্টার বেশি সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি৷ শিক্ষকদের নির্বাচন তো একটা রুমে না নিয়ে আরো কয়েকটা জায়গায় নিলেও হতো৷ বুথের সংখ্যা আরো বাড়ালে কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না।
রিটার্নিং অফিসার রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, সকাল নয়টা থেকে চাপ কিছুটা কম ছিল। শিক্ষকরা বেশিরভাগই এসেছেন দুপুরের দিকে। সকাল থেকে আসলে এতটা সমস্যা হতো না। আমরা বুথ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আরো ৫ টি বুথ বাড়ানোর জন্য কালো কাপড় ও টেবিল আনা হচ্ছে।
মূলত , দুটি প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ থেকে তাদের ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাথে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশ যুক্ত হয়ে গঠন করেছে ‘শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’। এই প্যানেলে বিএনপিপন্থীদের পক্ষ থেকে ২৭ জন এবং আওয়ামীপন্থী ছয়জন শিক্ষক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ১৯ (১) (জে) ধারা অনুসারে সিনেট সদস্য হিসেবে ৩৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি থাকেন। এসব প্রতিনিধির মেয়াদ তিন বছর হলেও পরবর্তী সিনেটর না আসা পর্যন্ত নির্বাচিতদের বৈধতা থাকে। এর আগে ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফলে দীর্ঘ আট বছর পর সিনেটের ৩৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।