ওসমান সরদার,জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন অফিস। প্রতিদিন শতশত শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা সেবা নিয়ে থাকেন এ অফিস থেকে। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের সেবায় নিয়োজিত থাকে এম্বুলেন্স। ঢাকাগামী শিক্ষার্থীদের কাছে আস্থার নাম জাবি পরিবহন অফিস।
অথচ গতবছরেও নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল এ অফিসের বিরুদ্ধে। প্রতিবছর গাড়ী মেরামত বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হতো পরিবহন অফিসকে। দায়িত্ব পালনে অবহেলা ছিল পরিবহন অফিসে কর্মরত স্টাফদের। কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে মেডিকেলের শরণাপন্ন হলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো এম্বুলেন্স এর জন্য।
বর্তমানে এ পরিবেশের উল্টো চিত্রের দেখা মিলে জাবি পরিবহন অফিসে। মাত্র ১১ মাসে দায়িত্ব পালন করে যিনি এই চিত্র পুরোটা পাল্টে দিয়েছেন, তিনি পরিবহন অফিসের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান।
দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই এ্যাম্বুলেন্স সেবাকে পরিবহন থেকে মেডিকেল সেন্টারের নিকট হস্তান্তর করেন যেন শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স সেবা পেতে সুবিধা হয়।
পরিবহন অফিসে কর্মরত সকল পর্যায়ের স্টাফদের মোটিভেশন এর মাধ্যমে সেবা প্রদানে আগ্রহ তৈরি করা এবং শুদ্ধাচার বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাইলেজ ঠিকমতো লিখানোর চেষ্টা করেন তিনি। ফলে বিগত বছরের তুলনায় ভাড়া কালেকশন দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
পরিবহন অফিসের আর্থিক অনিয়ম কিছুটা হলেও কমিয়ে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের অপচয় রোধ করতে সক্ষম হয়েছেন। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে যেখানে শুধুমাত্র গাড়ি মেরামতে খরচ হয়েছে ৫৮ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। সেখানে গত ১১ মাসে ২৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা খরচ করে গাড়ি মেরামতের কাজ শেষ করেন। একটি পাজেরো সহ পাঁচটি গাড়ি নামমাত্র খরচে সচল করতে সক্ষম হয়েছেন। অধ্যাপক ড. ছায়েদুর রহমান বলেন, পরিবহন অফিস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চ্যালেঞ্জ এর জায়গা। এখানে দায়িত্ব পালন করা কঠিন কাজ। আমি চেষ্টা করেছি সততার সাথে নিজের দায়িত্ব পালন করার। একই সাথে ভবিষ্যতে যেন পরিবহন অফিস আরও উন্নতি লাভ করে সেই প্রত্যাশা এই অধ্যাপকের।
পরিবহন সেবা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমানে পরিবহন অফিসের সেবা খুবই ভালো। সঠিক সময়ে সিডিউল অনুযায়ী আমরা বাসে যাতায়াত করতে পারছি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তিনি ধন্যবাদ জানান
এছাড়াও দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত মোট ৫৩৭৭ টি গাড়ি রিকুইজিশন দিয়েছেন এই অধ্যাপক। গত ১১ মাসে শিক্ষার্থীদের কোন সুবিধা কমেনি বরং গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাংবাদিক সহ সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনকে বিভিন্ন সময়ে সেবা প্রদান করে থাকে জাবির পরিবহন অফিস।
উল্লেখ, দীর্ঘ ১০ বছরের পরিবহন চত্বরের পাশে পড়ে থাকা ভাঙ্গা গাড়ি গুলো বিআরটিসিকে ফেরত দিতে সক্ষম হয়েছেন অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান।