তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি: সোনারগাঁয়ে বেড়াতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের পিটুনির শিকার হওয়ার ঘটনায় খোদ তিতুমীর কলেজেরই ৯০ শিক্ষার্থীকে শোকজ করা হচ্ছে। আহতদের শারিরীক অবস্থার উন্নতির হলে তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে কলেজ প্রশাসন।
এছাড়া তাদের অভিবাকদেরও কলেজে ডাকা হবে। রোববার এক জরুরী বৈঠক করে সরকারি তিতুমীর কলেজ প্রশাসন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধক্ষ্য, শিক্ষকবৃন্দ এবং কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক। এতে প্রাথমিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। শিক্ষার্থীদের থেকে ব্যাখ্যা পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে কলেজ প্রসাশন।
বৈঠক সূত্র বলছে, সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং পানাম নগরীতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বেড়াতে যান তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ৯০ শিক্ষার্থী। তবে ওইদিন তাদের বেড়াতে যাওয়ার জন্য কোন অনুমতি দেয়নি কলেজ প্রশাসন। তারপরও শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে মারধরের শিকার হন। আহত শিক্ষার্থীদের শারিরীক অবস্থার উন্নতি হলে এই ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।
একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের অভিভাবদেরও কলেজে ডাকা হবে। এজন্য এরই মধ্যে কয়েকজন অভিভাবককে ফোনও করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, তারা ব্যক্তিগতভাবে বেড়াতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হয়েছে। তবুও আমরা তাৎক্ষণিক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। সহযোগিতা লাগবে কিনা সেটা দেখেছি। তারা এখন বাসায় গেছে, ভালো আছে। শিক্ষার্থীরা সবাই সুস্থ হলে আমরা তাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাধ্যমে ডাকব এবং ঘটনার ব্যাখ্যা নিব। কেনো তারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে কলেজের ব্যানার ব্যবহার করে বেড়াতে গিয়েছিল। এসব বিষয়ে সত্যতা যাচাই করে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
এর আগে, গত শনিবার সোনারগাঁয়ে সারা দিন বেড়ানো শেষে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফেরার পথে কলেজের ছাত্রীরা আমিনপুর মাঠে স্থানীয় দুর্বৃত্তদের যৌন হয়রানির শিকার হন। ছাত্ররা এর প্রতিবাদ করায় ১০-১৫ জনের একটি দল ওই শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে হামলা করে। এতে অন্তত ২৫ শিক্ষার্থী আহত হয়। এই ঘটনায় আজ সকাল ১১টায় কলেজ প্রাঙ্গনে মানববন্ধনের ডাক দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সকালে কিছু শিক্ষার্থী মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিলেও পরে তা থেকে সরে আসেন তারা। তবে কেনো মানববন্ধন থেকে সরে আসলেন জানতে চাওয়া হলে মন্তব্য দিতে রাজি হননি মানববন্ধনের আয়োজকরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, সোনারগাঁয়ে বেড়াতে যাওয়ার জন্য তারা বিভাগীয় শিক্ষকদের জানিয়েছিলেন। তাদের আশ্বাস পেয়ে ভ্রমণের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ভ্রমণে যাওয়ার দু’দিন আগে তাদের সঙ্গে যাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানায় শিক্ষকরা। পরে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই সেখানে বেড়াতে যান। মাসুদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ভ্রমনের বিভাগের সব শিক্ষককে জানিয়েছি। তখন তারা বলেছিল তোমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাও।
আমরা ৯০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ভ্রমণের সব কিছুর ব্যবস্থা করেছি। পরে গত বৃহস্পতিবার বিভাগীয় প্রধানের কাছে যাই। তিনি আমাদের যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। কিন্তু আমরা সব আয়োজন প্রস্তুত করে ফেলেছি। তাই হঠাৎ করে বাতিল করতে পারিনি। তারপর শনিবার আমরা নিজেরা নিজেরা ভ্রমণে যাই।